যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতিতে কিছু এসে যায় না মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ভিসানীতি আমাদেরও থাকতে পারে। আমরাও করতে পারি। অপেক্ষায় থাকুন।
আজ শনিবার (১৭ জুন) দুপুরে গাজীপুরের টঙ্গীতে বিআরটি প্রকল্পের সাড়ে চার কিলোমিটার নির্মাণকাজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘মার্কিন ভিসা নীতিতে তারা বলছে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনে যারা বাধা দেবে তাদের ক্ষেত্রে প্রয়োগ হবে ভিসানীতি। এই নীতি এখন অন্ধ, বধির হয়ে থাকবে; না বাস্তববাদী হবে আমরা দেখব।’
এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দুর্নীতি, দুঃশাসন বললেই বিএনপির নাম বলতে হবে। যারা দুর্নীতি দুঃশাসন করে তারা কোনো মুখে এত বেশি কথা বলছে, জানি না।
সরকার থাকতে পারবে না, বিদায় নিতে বিএনপির আন্দোলনে এমন কথা ১৪ বছর ধরে শুনে আসছেন উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এই ১৪ বছরে তাদের নেত্রীর মুক্তির জন্য দৃশ্যমান কোনো আন্দোলন তারা করতে পারেনি, আর তারা সরকারের বিদায় করবে আন্দোলন করে?
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক জানান, বিদেশে পলাতক কোনো নেতার রিমোট কন্ট্রোলের আহ্বানে জনগণের সম্পৃক্ততায় কোনো আন্দোলন হবার সম্ভাবনা নেই। অনেক চেষ্টা করেছে। কিন্তু করতে পারেনি।
জামালপুরে সাংবাদিক হত্যাকাণ্ড নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, হত্যার সঙ্গে জড়িত হলে ওই ব্যক্তির বিচার হবে।
জামালপুর আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত চেয়ারম্যানের নির্দেশে সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিকে পিটিয়ে হত্যার বিষয়ে দলে পক্ষ থেকে দোষীদের বিরুদ্ধে কব ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, চেয়ারম্যান জড়িত হলে তার বিচার হবে। তাকে শাস্তির আওতায় আনা হবে। এপর্যন্ত আমরা কাউকে রেহাই দেইনি।
তিনি বলেন, জড়িতকে জেলে ঢুকায় দিলে দলীয় ভাবে কী প্রবলেম দলীয়ভাবে আমি তাকে বরখাস্ত করলাম, অব্যাহতি দিলাম, তাতে সাংবাদিকের কী লাভ হবে, এটা হত্যার বিচার হলো? হত্যার বিচার হবে প্রশাসনিক ব্যবস্থার মধ্যে। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেটাই প্রকৃত ব্যবস্থা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, যদি দলীয় কারও বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়, যদি তার বিরুদ্ধে চার্জশিট গঠন হয়, তবে আওয়ামী লীগে তার কোনো পদ থাকবে না।
সেতুমন্ত্রী এ সময় বিআরটি প্রকল্প নিয়ে বলেন, সময়ের বিবেচনায় দীর্ঘসূত্রতায় চলে গেছে এ প্রকল্পটি। হবে কি হবে না এরকম একটা দ্বিধা-সংশয় কাজ করেছে। তিনি বলেন, গাজীপুরে এই সড়কের মতো প্রকল্প চিন্তা করার আগে আরও গভীরভাবে ভেবেচিন্তে প্রকল্প নিলে ভালো হতো। এখানে সম্প্রসারণের প্রস্তাব দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। তবে এখানে আমাদের যে রাস্তা তাতে ভোগান্তি বাড়াবে, দুর্ভোগে পড়বে যেটা গোটা রাজধানীতে প্রভাব ফেলবে। আমাদের বিকল্প বাংলাদেশে অনেক উন্নয়ন প্রকল্পের রাস্তা করেছি। বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে নিরাপদ সড়কের জন্য প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প চলছে।
এ সময় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, সার্বিক বিবেচনায় সবচেয়ে বেশি দরকার শৃঙ্খলা, পরিবহনে শৃঙ্খলা। এটা একটা চ্যালেঞ্জ। এটা অতিক্রম করতে হবে।
তিনি বলেন, আগামী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর নাগাদ পুরো প্রকল্প সমাপ্ত করে উদ্বোধনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। এ ছাড়া আগামী নির্বাচনের আগে তেজগাঁও পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে করতে পারবো। সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মধ্যে মেট্রোরেল মতিঝিল পর্যন্ত করতে পারবো। এর মধ্যে টানেল প্রস্তুত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সময় দিলে টানেল উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুত।
মন্ত্রী বলেন, আমরা এক দিনে শত সেতুর উদ্বোধন করেছি। আরও একশ সেতু করব তার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী, সেতু বিভাগের সচিব মনজুর হোসেনসহ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এর আগে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন।